স্বদেশ ডেস্ক:
সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে সব সময় আন্তরিক ও বদ্ধপরিকর সরকার। বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের উন্নয়নে যে পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, সুন্দরবন এবং এর জীববৈচিত্র্য যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এ বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত আসনের বেগম সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘সুন্দরবনের আয়তন বাড়ানোর জন্য সরকার কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে। সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলে এর বিস্তৃতি ঘটানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের বৃক্ষাদি এবং বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য তথা বন অপরাধ দমনের জন্য স্মার্ট পেট্রোলিংসহ নানাবিধ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
সুন্দরবনের উন্নয়নে সরকারের নেওয়া নানান পদক্ষেপের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি জানান, জীব বৈচিত্র্যের আধার সুন্দরবনে এখন ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড এবং ৩৭৫ প্রজাতির বন্য প্রাণী পাওয়া যায়। বন্য প্রাণীর মধ্যে ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৮ প্রজাতির উভচর, ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ২১০ প্রজাতির মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে।
তিনি বলেন, ‘সুন্দরবন সম্প্রসারিত হচ্ছে। ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬টি। ২০১৮ সালের শুমারিতে এর সংখ্যা ১১৪টি পাওয়া গেছে। সুন্দরবনের কার্বন মজুতের পরিমাণ ২০০৯ সালের ১০৬ মিলিয়ন টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯ সালে ১৩৯ মিলিয়ন টন হয়েছে।’
সুন্দরবনের গাছপালা ও বন্যপ্রাণীকূলকে রক্ষার জন্য বনকর্মীদের যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার কথাও তুলে ধরেন সরকার প্রধান। ২০১৭ সালে বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সুন্দরবনের প্রায় ৫৩% এলাকা অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত।’
এদিকে, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের আনোয়ার হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেসব স্থানে অবস্থান করে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেসব স্থান বিশেষভাবে সংরক্ষণের জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের স্মরণে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ১৫০ ফুট উঁচু গ্লাস টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। যশোরের রাজগঞ্জ বাজারে ও ফরিদপুরের আম্বিকা ময়দানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। ঢাকার মিন্টো রোড ও আব্দুল গণি রোডের ভবনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ছিল, বিধায় সেগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে আইনানুগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের যেসব স্থানে বঙ্গবন্ধুর বিশেষ স্মৃতি বিজড়িত ওইসব স্থান ঘটনার তাৎপর্য, ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় স্মৃতিস্বরূপ সংরক্ষণ করা হলে তরুণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শ সম্পর্কে অবহিত হতে পারবে।’